‘পাখি’ গল্পটি লীলা মজুমদারের সৃষ্টিশীল শিশুসাহিত্য থেকে নির্বাচিত এক চমৎকার গল্প। গল্পের মূল চরিত্র কুমু, যে অসুস্থ হয়ে পড়েছে এবং পরিবারের সহায়তায় ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে ওঠে। গল্পটি শুধুমাত্র কুমুর শারীরিক অবস্থার বর্ণনা নয়, এটি প্রাণীদের প্রতি মানবিক সহানুভূতি ও মমত্ববোধের শিক্ষাও দেয়।
গল্পে কুমু আহত পাখিকে সুরক্ষা দেয়, তাকে ঝুড়িতে রাখে এবং ধৈর্য্য সহকারে পাখিটিকে সুস্থ হতে সাহায্য করে। পাখির সুস্থতার সাথে সাথে কুমু নিজেও মানসিক ও শারীরিকভাবে শক্তিশালী হয়ে ওঠে। গল্পটি শিশুদের মধ্যে ধৈর্য্য, সহানুভূতি এবং দায়িত্বশীলতার চেতনা জাগানোর জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
এই ব্লগে আমরা ‘পাখি’ গল্পের উপর ভিত্তি করে ৫০+ সংক্ষিপ্ত/জ্ঞানমূলক প্রশ্ন ও উত্তর সংকলিত করেছি। শিক্ষার্থীরা এই প্রশ্নগুলোর মাধ্যমে গল্পের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো আরও ভালোভাবে অনুধাবন করতে পারবে এবং পরীক্ষার প্রস্তুতিও নিতে পারবে।
গল্পের মাধ্যমে পাঠকরা কেবল কুমুর ব্যক্তিগত চ্যালেঞ্জ নয়, বরং প্রাণী ও প্রকৃতির প্রতি মানবিক দায়িত্বও বুঝতে সক্ষম হবে। এটি একটি প্রেরণামূলক গল্প, যা শিশুদের আবেগ ও নৈতিক মূল্যবোধ উন্নয়নে সহায়ক।
পাখি সংক্ষিপ্ত/জ্ঞানমূলক প্রশ্ন ও উত্তর
১) কুমু অসুস্থ হলে পরিবার কাকে পাশে রাখে?
উত্তরঃ দিদিমাকে (দিম্মা)
২) কুমুর অসুস্থতার জন্য পরিবার কত মাস শিথিল পরিবেশে রাখার পরামর্শ দেয়?
উত্তরঃ তিন মাস
৩) কুমু পড়াশোনায় কেমন ছিল?
উত্তরঃ ভালো
৪) কুমুর পড়াশোনার ক্ষতি হতে না দেওয়ার জন্য কে সাহায্য করবে বলে বলা হয়?
উত্তরঃ লাটু (মাস্টার)
৫) কুমুর চোখ ঝাপসা হওয়ার কারণ কী?
উত্তরঃ ভাবনায় কান্না
৬) সোনাঝুরি কোথায় অবস্থিত?
উত্তরঃ দিদিমার বাড়ি
৭) বিলের পানিতে বৃষ্টির ফোঁটার মিশ্রণ দেখে কুমু কেমন অনুভব করে?
উত্তরঃ আনন্দিত ও কৌতূহলী
৮) বুনোহাঁস কোথা থেকে আসে?
উত্তরঃ উত্তরের ঠান্ডা দেশ
৯) বুনোহাঁস দক্ষিণে যাওয়ার আগে কোথায় বিশ্রাম করে?
উত্তরঃ বাঁধের কাছে দুই-তিন দিন
১০) লাটু পাখির জন্য কী আনতে আসে?
উত্তরঃ সাদা ফুল
১১) পাখি আহত হওয়ার কারণ কী ছিল?
উত্তরঃ শিকারির গুলি
১২) কুমু পাখিকে ঝুড়িতে রাখার পর কী করে?
উত্তরঃ তাকে খাবার দেওয়ার চেষ্টা করে
১৩) পাখির ডানায় কী করা হয়?
উত্তরঃ চুন-হলুদ বেঁধে দেওয়া
১৪) চুন-হলুদ বেঁধে দেওয়ার উদ্দেশ্য কী?
উত্তরঃ ক্ষত স্থানের জন্য উপকারী
১৫) কুমুর পা কতদূর উঠতে পারে?
উত্তরঃ এক বিঘত
১৬) কুমু ঝুড়িতে থাকা পাখির জন্য কী ভাবছিল?
উত্তরঃ যদি ডানা ভেঙে যায় তবে কী হবে
১৭) লাটু কুমুর জন্য ঝুড়ি কোথায় রাখে?
উত্তরঃ লেবু গাছের ডালে
১৮) পাখি ঝুড়িতে বসার সময় কী করে?
উত্তরঃ চোখ বন্ধ করে বসে থাকে
১৯) কুমু পাখিকে খাবার দিতে কী ব্যবহার করে?
উত্তরঃ বিস্কুট
২০) পাখি কবে ধীরে ধীরে ডালে ওঠে?
উত্তরঃ সেরে ওঠার পর
২১) কুমু কিভাবে নিজেকে সুস্থ করতে উৎসাহিত হয়?
উত্তরঃ পাখির সুস্থতা দেখে
২২) কুমু খাট থেকে কোথায় বসে পড়ত?
উত্তরঃ জানালার ধারে
২৩) বুনোহাঁসরা উড়ে কোথায় যায়?
উত্তরঃ দক্ষিণ দিকে
২৪) কুমু পাখিকে দেখার সময় কী অনুভব করে?
উত্তরঃ আনন্দ ও কৌতূহল
২৫) ঝুড়ি থেকে পাখি উড়ে যাওয়ার পরে কী ঘটে?
উত্তরঃ দলবদ্ধ হয়ে উড়ে যায়
২৬) পাখি কেমন ডানা নিয়ে উড়ে?
উত্তরঃ এক ডানা একটু ছোটো
২৭) কুমু ও লাটুর সহযোগিতার শিক্ষা কী?
উত্তরঃ সহানুভূতি ও দায়িত্বশীলতা
২৮) কুমুর বাবা কাকে দিয়ে পড়াশোনা ঠিক করার কথা বলেন?
উত্তরঃ লাটু
২৯) কুমু কোন কারণে দুশ্চিন্তায় ছিল?
উত্তরঃ পড়াশোনায় পিছিয়ে থাকার কারণে
৩০) ঝুড়ি কীভাবে পাখির নিরাপত্তা নিশ্চিত করে?
উত্তরঃ ডানা ভাঙা ও শিকারির আঘাত থেকে রক্ষা করে
৩১) পাখি কিভাবে খাবার খেতে শিখে?
উত্তরঃ নিজেই পোকামাকড় ধরে খায়
৩২) পাখি কবে ঝুড়ি থেকে ডালে ওঠে?
উত্তরঃ ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে গেলে
৩৩) কুমু নিজে কিভাবে নিজেকে সুস্থ রাখে?
উত্তরঃ হাঁটাচলা, নিজে বিছানা করা, স্নান করা ও পড়াশোনা করা
৩৪) লাটু পাখির জন্য কীভাবে ঝুড়ি শক্ত করে বাঁধে?
উত্তরঃ দড়ি দিয়ে
৩৫) পাখির চোখ কোনভাবে থাকে ঝুড়িতে বসে?
উত্তরঃ চোখ বন্ধ করে, তারপর ধীরে ধীরে খোলে
৩৬) কুমু ঝুড়ি থেকে পাখিকে দেখার সময় কী চিন্তা করে?
উত্তরঃ যদি ডানা ভেঙে যায় তবে কী হবে
৩৭) পাখি কিভাবে ধীরে ধীরে নিজের ডানা ঝাপটাতে শিখে?
উত্তরঃ ঝুড়ি থেকে ধীরে ধীরে ডালে ওঠে
৩৮) কুমু কীভাবে নিজেকে সুস্থ করার প্রেরণা পায়?
উত্তরঃ পাখির সুস্থতা ও অনুপ্রেরণামূলক ঘটনা দেখে
৩৯) লাটু কুমুর জন্য কী দিক থেকে সহায়ক?
উত্তরঃ ঝুড়ি বানানো ও পাখি রক্ষা করা
৪০) পাখি শেষ পর্যন্ত কোথায় যায়?
উত্তরঃ দলবদ্ধ হয়ে উড়ে যায়
৪১) কুমু পাখির সুস্থতা দেখে কী শেখে?
উত্তরঃ ধৈর্য্য, মনোবল, সহানুভূতি
৪২) পাখির আঘাত কিভাবে মারাত্মক হতে পারত?
উত্তরঃ শিকারির গুলির কারণে
৪৩) ঝুড়িতে থাকা পাখি কবে খেলতে শুরু করে?
উত্তরঃ ডানা সেরে ওঠার পর
৪৪) কুমু পাখির জন্য ঝুড়ি কোথায় রাখার পরামর্শ দেয়?
উত্তরঃ নিজের বিছানায় লেপের মধ্যে
৪৫) গল্পের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা কী শিক্ষা পায়?
উত্তরঃ প্রাণীর প্রতি সহানুভূতি, ধৈর্য্য, দায়িত্বশীলতা এবং জীবনযাত্রার মানসিক শক্তি
উপসংহার
‘পাখি’ গল্পটি শিশুদের মধ্যে প্রাণীর প্রতি সহানুভূতি, দয়া ও দায়িত্বশীলতার শিক্ষার প্রতি গুরুত্বারোপ করে। কুমু ও লাটুর চরিত্রের মধ্য দিয়ে গল্পটি দেখায় কীভাবে ধৈর্য্য, যত্ন এবং সাহসিকতা জীবনের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় সহায়ক হতে পারে।
গল্পটি কেবল পাখির সুস্থতার গল্প নয়, এটি শিশুদের মধ্যে সহমর্মিতা, মনোবল, এবং জীবনযুদ্ধে ধৈর্য্যশীল থাকার শিক্ষা প্রদান করে। কুমুর অভিজ্ঞতা আমাদের শিখায় যে, অন্যের প্রতি মমত্ববোধ এবং যত্নের মাধ্যমে আমরা নিজেকেও মানসিকভাবে শক্তিশালী করতে পারি।
শিক্ষার্থীরা এই গল্পের সংক্ষিপ্ত/জ্ঞানমূলক ও বহুনির্বাচনি প্রশ্নের মাধ্যমে গল্পের গভীর বিষয়গুলো সহজে অনুধাবন করতে পারবে। এটি গল্পের প্রাণী-মৈত্রী এবং নৈতিক শিক্ষা বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ পাঠ তৈরি করে।
‘পাখি’ গল্পটি পড়ে শিক্ষার্থীরা কেবল একটি সৃষ্টিশীল গল্প উপভোগ করবে না, বরং প্রাণী ও মানুষের মধ্যে সাদৃশ্যপূর্ণ সম্পর্ক এবং দায়িত্ববোধের মূল্যও শিখবে। এটি শিশু সাহিত্য এবং পাঠ্যক্রমের জন্য একটি অমূল্য সম্পদ।

